ডায়াবেটিস কি? what is diabetes জেনে নিন বিস্তারিত

ডায়াবেটিস কি? what is diabetes

ডায়াবেটিস হল শরীরের একটি মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা , যখন আমাদের শরীরে তৈরি হওয়া ইনসুলিন কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে পারে না ।এবং নতুন করে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না ।

ডায়াবেটিস কি? what is diabetes

রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বা শর্করারর মাত্রা বেড়ে যায়।ইনসুলিন মানবদেহের শরীরের কোষে শর্করা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ হিসেবে কাজ করে।

আমরা যে খাবার খাই তার থেকে যে গ্লুকোজে বা চিনি পাওয়া যায় তা আমাদের শরীরে রক্তের মধ্যে দিয়ে বাহিত হয়ে কোষে প্রবেশ করতে ইনসুলিন সাহায্য করে।

তারপর কোষ শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি গ্লুকোজে থেকে ব্যবহার করে । অগ্ন্যাশয়ের বিশেষ কোষ দ্বারা শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়।

ডায়াবেটিস জনিত ইনসুলিনের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা তারতম্য ঘটে। ফলে আমাদের শরীরে কিছু অস্বাভাবিক সমস্যা দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস কি এবং কেন হয় What is diabetes and why does it occur?

আমরা কোন খাবার গ্ৰহন করার পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যর শর্করার ভেঙ্গে গ্লুকোজে পরিনত করে।

তারপর অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামক যে হরমোন তৈরি হয় ।

সেটা শরীরের কোষগুলোকে গ্লুকোজ গ্ৰহন করার নির্দেশ প্রদান করে। এই গ্লুকোজ শরীরের শক্তি বা জালানি হিসেবে কাজ করে।

শরীরে যখন ইনসুলিন ঠিক মত তৈরি হয় না তখন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। এবং রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে থাকে।

ডায়াবেটিস কি কি কারণে হয় এই রোগ হওয়ার পেছনে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন বিভিন্ন অভ্যাস দায়ী। যেমন:

  • শারীরিক পরিশ্রম না করা : এখন মানুষ কোন পরিশ্রমই করে খাওয়া অনুযায়ী দৈনিক কিছু না কিছু শারীরিক পরিশ্রম করা জরুরি।
  • ব্যয়াম না করা: আমাদের দৈনিক কিছু ব্যয়াম করা জরুরি দিনে কিছু ব্যয়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন
  • মানসিক চাপ: ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো মানসিক চাপ। পারিবারিক চাপ, কাজের চাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানো: বর্তমানে আমরা অনেক রাত জেগে থাকি অতিরিক্ত অনিদ্রা ব্লাড সুগার হওয়ার কারণ।
  • মিষ্টি বেশি খাওয়া: আমরা অনেকেই বেশী মিষ্টি খাওয়া পছন্দ করি বেশি মিষ্টি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • নিয়ন্ত্রণ : আমাদের জীবন যাপন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে দৈনিক হাঁটা চলা ফাস্টফুড কোমল পানীয় খাবার এসব নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
  • ধুমপান মদ্যপান: অতিরিক্ত ধুমপান মদ্যপান ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ হয়ে থাকে।
  • সঠিক তথ্য জানা : ডায়াবেটিস রোগীদের সঠিক তথ্য জানা দরকার ,খাওয়া ,ওষুধ ,ব্যয়াম, এগুলো জানা থাকলে রোগীদের চলাফেরা অনেক সহজ হয়ে

 

ডায়াবেটিস কত ধরনের What are the types of diabetes?

ডায়াবেটিস কয়েক ধরনের হয়ে থাকে তার মধ্যে দুই ধরনের ডায়াবেটিস বেশি হয়। যেমন:

  • টাইপ 1 ডায়াবেটিস,
  • টাইপ 2 ডায়াবেটিস,
  • গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ,

টাইপ 1 ডায়াবেটিস,

টাইপ 1 রোগীদের শরীরে মোটেই ইনসুলিন তৈরি হয় না‌। শরীরে ইনসুলিন তৈরি কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়।এই রোগ বেশিরভাগ শিশু ও কিশোরদের হয়ে থাকে।

সাধারণ 12 থেকে 32 বছর বয়সী তাদের এই ধরনের ডায়াবেটিস হয়। এই ধরনের রোগীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনজেকশন এর মধ্যেমে ইনসুলিন নিতে হয়।

টাইপ 2 ডায়াবেটিস

টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে যে পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এবং অনেক সময় উতপন্ন হওয়া ইনসুলিন শরীরে ব্যবহার করতে পারে না ।

টাইপ 2 রোগের পেছনে মুলত থাকে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এই রোগীদের সংখ্যা বেশিরভাগ মধ্যে বয়সী লোকের হয়ে থাকে। সাধারণ এইসব আক্রান্ত ব্যক্তি ইনসুলিন নির্ভর না।

টাইপ 2 আক্রান্ত লোকের খাদ্যবাস পরিবর্তন ও ব্যয়াম এর মাধ্যমে প্রথম অবস্থায় মোকাবেলা করা হয়। তবে প্রথম অবস্থায় রোগীদের অবস্থা বুঝে মুখে খাওয়ার ওষুধ এবং ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ Symptoms of diabetes?

ডায়াবেটিস এর অনেক গুলো লক্ষণ আছে তার মধ্যে অন্যতম লক্ষণ গুলো হলো যেমন:

  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া,

 

  • পানির পিপাসা বেশি লাগা,

 

  • ওজন কমে যাওয়া ,

 

  • বেশি বেশি ক্ষুধা অনুভব লাগা,

 

  • মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া,

 

  • শরীর দুর্বল লাগা,

 

  • চোখে যাপসা ভাব দেখা,
  • কাঁটা বা ঘাদেরিতে শুকানো,

ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি? What to do if you have diabetes?

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: আক্রান্ত ব্যক্তি কোন খাদ্য কি পরিমান খাবেন এবং কতটুকু খাবেন তা জানতে হবে। এবং আক্রান্ত ব্যক্তি তার খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে খেতে হবে।

এই রোগের প্রধান পরিবর্তন হলো খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন তাই নিয়মিত সুষম খাদ্য রোগীদের সুস্থ্য থাকতে সাহায্য করে।

শারীরিক পরিশ্রম: দিনে কিছু না কিছু শারীরিক পরিশ্রম করা জরুরি। সারাদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন।

জীবনযাপন পরিবর্তন: প্রতিদিন কি পরিমান খাচ্ছেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান কি সে দিকে নজর দিতে হবে। এবং শরীরের ওজনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে, এবং ঠিক মত পুষ্টিকর খাবার খান কি না তার উপর নজর দিতে হবে।

ওষুধ সেবন: উপর সবগুলো নিয়ম মেনে চলার পর যদি আপনার সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রিত না হয়, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অন্যতম খাবার হলো যেমন:

তাজা শাক-সবজি, লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, তাজা ফলমূল, মৌসুমী ফল, ইত্যাদি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, ও সুষম খাদ্য, খাওয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য অনেক জরুরী।

ডায়াবেটিস কি? what is diabetes?

 

 

 

 

 

 

Leave a Comment