ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ রক্তে যদি গ্লুকোজের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যায় তাহলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিন্তু রক্তে সুগারের মাত্রা কত হলে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ? এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আগে ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ ও প্রভাব সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
তাই আমরা এই পোস্টে এই বিষয়ে আলোচনা করব পোস্টটি সম্পুর্ন পড়বেন জানান জন্য।
রক্তে সুগারের মাত্রা ও ঝুঁকি
স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তে সুগারের মাত্রা কেমন হওয়া উচিত তা নিচে দেখে নিন।
- খালি পেটে: খালি পেটে সুগারের মাত্রা যদি ৭০-১০০ mg/dL অথবা ৩.৯-৫.৬ mmol/L
- খাওয়ার ২ ঘন্টা পর : ৭০-১৪০ mg/dL অথবা ৩.৯-৭.৮ mmol/L হয়
রক্তে যখন গ্লুকোজের মাত্রা অধিক পরিমাণে বেড়ে যায় এবং অনেক কমে যায় তখন বিপদজনক হতে পারে।
সুগারের মাত্রা বেশি হলে হাইপার, (গ্লাইসেমিয়া)
- ৩০০ mg/dL এর উপরে যদি হয় তাহলে বিপদ সংকেত অতি দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
- ৬০০ mg/dL এর উপরে যদি হয় তাহলে অনেক গুরুতর অবস্থা যা ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস (DKA)হাইপারসমোলার হাইপারগ্লাইসিমীয়া স্টেট (HHS) সৃষ্টি হতে পারে, এমতাবস্থায় অতি বিলম্বে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন।
রক্তে সুগারের মাত্রা কম হলে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া)
- ৭০ mg/dL এর নিচে হলে বিপদ জনক।
- ২০-৩০ mg/dL এর নিচে হয় তাহলে সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ঝুঁকি রোধের করণীয়
নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা: গ্লুকোজ মিটার ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন: কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান এবং অধিক পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলুন: ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ইনসুলিন সময়মতো নিন।
জরুরি অবস্থা জানুন: যদি বমি,বা মাথা ঘোরা, চেতনা অন্য লক্ষণ দেখা দেয় তা হলে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নিন।
ডায়াবেটিস কত হলে স্বাভাবিক বা নরমাল:
খালি পেটে একজন সুস্থ মানুষের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৪-৬ হল স্বাভাবিক মাত্রা বা নরমাল।কিন্তু আমেরিকার স্বাস্থ্য সংস্থার মতে খালি পেটে ৫.৭ পর্যন্ত স্বাভাবিক মাত্রা ধরা হয়।
৫.৭-৬.৪ ধরা হয় ডায়াবেটিসের প্রাথমিক অবস্থা তবে দুইটি আলাদা ভাবে পরীক্ষা করার পর ৬.৫ এর বেশি হয় তাহলে ডায়াবেটিস আছে ধরা হয়।
আর খাওয়ার পর ৮ এর নিচে থাকে তাহলে নরমাল ধরা হয়। আক্রান্ত রোগীদের খালি পেটে ৪.৭ এবং ভরা পেটে ৮.৬ হলে নরমাল বলা হয় ।
উপসংহার:
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ হয়ে থাকলে ও সঠিক চিকিৎসা ও জীবন যাপন ধারার মধ্যে দিয়ে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তাই রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে বা কমে গিয়ে জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।তাই ডায়াবেটিস রোগীদের সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা খুবই জরুরি।